avertisements
Text

জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর দিনটি হোক সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার অঙ্গীকারের দিন

| প্রকাশ: ১৭ মার্চ, মঙ্গলবার, ২০২০ | আপডেট: ৩ মে, শুক্রবার, ২০২৪

আজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী (১৭ মার্চ ১৯২০-১৫ আগস্ট ১৯৭৫)। তিনি ১৯২০ সালের ১৭ মার্চের এই দিনে গোপাল গঞ্জের টৃঙ্গীপাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন। শেখ মুজিবুর রহমান, সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা মুজিব, ছিলেন বাংলাদেশের  প্রথম রাষ্ট্রপতি ও ভারতীয় উপমহাদেশের একজন অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যিনি বাঙালির অধিকার রক্ষায় ব্রিটিশ ভারত থেকে ভারত বিভাজন আন্দোলন এবং পরবর্তীতে পূর্ব পাকিস্তান  থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি হিসাবে শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের ‘জাতির জনক’  বা ‘জাতির পিতা’  বলা হয়ে থাকে। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং পরবর্তীতে এদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। জনসাধারণের কাছে তিনি শেখ মুজিব এবং শেখ সাহেব হিসাবে বেশি পরিচিত ছিলেন এবং তার উপাধি ‘বঙ্গবন্ধু’

এই মহান রাজনীতিক বেঁচে থাকলে তাঁর বয়স হত ১০০ বছর। যার হাত ধরে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, ১৫ আগস্টের কলংঙ্গজনক ঘটনা না ঘটলে আজ নিশ্চয়ই বাংলাদেশের আগে সোনার বাংলা অভিধাটির বাস্তবায়ন হত। বাংলাদেশের যাকিছু মহান অর্জন তার বেশির ভাগই বঙ্গবন্ধুর অবদান রয়েছে। ইতিহাসের এই রাখাল রাজা তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করেছেন বাঙালি স্বাধিকার আদায়ের লড়াইয়ে, তিনি জীবনের একটি গুরুত্ব সময় পার করেছেন কারাগারের অন্ধকার কুঠুরীতে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে এ দেশের প্রতিটি লড়াইয়ে তিনি ছিলেন অগ্রনায়ক। বঙ্গবন্ধু ছাড়া বাংলাদেশ নামক ভুখণ্ডের কল্পনা করা যায় না।

বাংলাদেশ তথা ‍পৃথিবীর তাবৎ বাঙালি এই মহান পুরুষকে নিয়ে গর্ব করেন। তাই এই মহান মানুষের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে

জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেসকো এবং বাংলাদেশ বিভিন্ন অনুষ্ঠান যৌথভাবে উদ্‌যাপন করবে। মূল অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব ও বিশ্বনেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

২০২০ সালের আজ ১৭ মার্চ শুরু হয়ে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপিত হবে। জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের নেতাসহ কয়েকজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, ইউনেসকোর সাবেক মহাসচিব ইরিনা বুকোভা ও আরব লিগের সাবেক মহাসচিব আমর মুসা।

আমন্ত্রণের তালিকায় থাকা আন্তর্জাতিক নেতাদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, ভারতের কংগ্রেস পার্টির সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতা ও ভারতের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী এল কে আদভানি, জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ প্রমুখ।

২০২০ সালের মার্চে শুরু হয়ে পরের বছরের মার্চ পর্যন্ত অনেকগুলো অনুষ্ঠান হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয় বছরজুড়ে পৃথক পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আগামী মার্চ থেকে প্রতিবছর বঙ্গবন্ধু স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করা হবে।

বঙ্গবন্ধুর নামে আগামী বছর থেকে একটি পুরস্কার প্রবর্তন করতে যাচ্ছে ইউনেসকো। গবেষণা ও সৃজনশীলতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিকাশে তরুণদের উৎসাহিত করতে এ পুরস্কার দেওয়া হবে। ২০২০ সাল থেকে প্রতিবছর ওই পুরস্কারের জন্য ইউনেসকোকে অর্থ দেবে বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৭ সালের অক্টোবরে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো।

নিউইয়র্ক, লন্ডন, দিল্লি, কলকাতা, বার্লিন, টোকিওসহ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সম্মেলন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ১২টি স্বল্পদৈর্ঘ্য, ১২টি তথ্যচিত্র এবং একটি ওয়েব সিরিজ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীকারাগারের রোজনামচা দক্ষিণ আমেরিকা ও ইউরোপে প্রকাশের জন্য খুব শিগগির একটি খ্যাতনামা প্রকাশনা সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একটি প্রকাশনা সংস্থাকে বঙ্গবন্ধুর জীবনী প্রকাশের কাজ দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর গুরুত্বপূর্ণ ভাষণের একটি সংকলন বের করবে আন্তর্জাতিক একটি প্রতিষ্ঠান।

যদিও বিশ্বজুড়ে সম্প্রতি করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গৃহীত বিভিন্ন অনুষ্ঠান সংকুচিত করা হয়েছে, তবু মুজিব বর্ষ উদ্‌যাপন কালে দেশজুড়ে নানা কর্মসূচি পালনের সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন উপস্থাপনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনা নতুন প্রজন্মের মধ্যে বিকশিত হবে। এই দিনে ‘স্বদেশ বার্তা’ পত্রিকা জানায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। এবং আমাদের প্রত্যাশা জাতির পিতার আদর্শে বাংলাদেশ হয়ে উঠুক সুখী-সমৃদ্ধ এক সোনার বাংলা।

avertisements